November 21, 2024, 12:37 pm
বিপ্লবী ডেস্ক ॥ কলাপাড়ায় বৈধের চেয়ে অবৈধ করাতকলই বেশি। এসব করাতকলে বনের অপরিপক্ক গাছপালা চেরাই চলে সমানতালে। ফলে উপকূলের সংরক্ষিত-অসংরক্ষিত বনাঞ্চল ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। বনবিভাগ এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের উদাসীনতায় সাগরপারের জনপদ কলাপাড়ায় কাগজপত্রবিহীন করাতকলের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।
নেই কোন নিয়ম কানুনের বালাই। বনবিভাগের দেয়া তথ্য মতে, উপজেলায় মোট ৭৭টি করাতকল রয়েছে। যার মধ্যে ৪৫টির কোন বৈধতা নেই। এর থেকে প্রতীয়মান হয় যে, বাস্তবতা কতটা খারাপ। সবচেয়ে বেহালদশা মহিপুর রেঞ্জের। এখানে ৪১টি করাতকলের ৩৭টি অবৈধ। বনবিভাগের নাকের ডগায় এসব অবৈধ করাতকল চলমান রয়েছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে নীতি নিয়ম সব এখানে অনুপস্থিত।
এমনকি স্থানীয় লোকজনের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে অবৈধ করাতকল বন্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য উপকূলীয় বনবিভাগ পটুয়াখালীর বন কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন এপ্রিল মাসের ৫ তারিখে সংশ্লিষ্ট রেঞ্জ কর্মকর্তাদের লিখিত নির্দেশনা দিলেও এসব অবৈধ করাতকল আজ পর্যন্ত বন্ধ হয়নি।
স্থানীয়রা জানান, মহিপুর রেঞ্জের অধীন খাজুরা, কুয়াকাটা, গঙ্গামতি এবং ধুলাসার এলাকার সংরক্ষিত এবং সামাজিক বনায়নের আশপাশেই এসব করাতকল স্থাপন করা হয়েছে। এক শ্রেণীর প্রভাবশালী মহল নিজের খেয়াল-খুশি মতো বেড়ি বাঁধের বাইরে, নদীর তীরে পর্যন্ত করাতকল স্থাপন করেছে। মহিপুর, লতাচাপলী, ধুলাসার, মিঠাগঞ্জ, লালুয়া, বালিয়াতলীতে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। কুয়াকাটাগামী মহাসড়ক ও বিকল্প সড়কের পাশেও জনবহুল এলাকায়- এমনকি আবাসিক এলাকায়ও বসানো হয়েছে করাতকল।
সবচেয়ে বাজে অবস্থা মহিপুর রেঞ্জের ৪১টি করাতকলের মাত্র চারটির কাগজপত্র বৈধ রয়েছে। বাকিসব অবৈধভাবে চলছে। লালুয়ার বানাতিবাজারের অবৈধ করাতকল বন্ধের লক্ষ্যে সেখানকার মানুষ লিখিত অভিযোগ পর্যন্ত করেছেন। এসব করাতকলে দিনে-রাতে অপরিপক্ক গাছ চেরাই করা হচ্ছে নিয়মিত। এছাড়া সংরক্ষিত বনের গাছ চেরাই হয় রাতের বেলা। এজন্য রয়েছে একটি সিন্ডিকেট। কুয়াকাটার একাধিক পরিবেশ কর্মী জানান, এখানে করাতকল বসানো হচ্ছে খেয়ালখুশি মতো। বনবিভাগ উদাসীন।
এ কারণে সংরক্ষিত বনাঞ্চল চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। তারা জানান, খাপড়াভাঙ্গা নদী তীর দখল করে পর্যন্ত করাতকল বসানো হয়েছে। মহীপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান, তারা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখবেন। তবে সকল করাতকলের লাইসেন্স করাসহ নবায়নের জন্য উদ্যোগ নেয়ার কথা জানালেন কলাপাড়ার বন কর্মকর্তা আব্দুস সালাম।
উপজেলা বন ও পরিবেশ কমিটির সভাপতি ও কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদুল হক জানান, প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। বৈধতা থাকতে হবে করাতকল চালাতে। নিয়ম-নীতির বাইরে কেউ করাতকল চালাতে পারবে না।
Leave a Reply